বাবাদের ত্যাগ গোপন থেকে যায় কখনো কখনো জানাও সম্ভব হয় না।
গাইবান্ধার মোহাম্মদ রাজুকে দেখলে তাই মনে হবে। ছেলে রেজোয়ানের জন্য শখ করে নিজের কষ্টের টাকা জমিয়ে কিনেছিলেন একটা সাইকেল। এই সাইকেল ঢাকা থেকে গাইবান্ধা নিয়ে যেতে বাসভাড়া চাইলো ২০০০ টাকা। কিন্তু তার পকেটে আছে মাত্র ২২০০ টাকা। বাড়িতে পরিবার তার পথ চেয়ে বসে আছে। ২০০০ টাকা বাস ভাড়া দিয়ে শূন্য হাতে বাড়ি ফিরলে ঈদে খরচ করার মত কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না পরিবারের জন্য। অগত্যা সুপারম্যান এই বাবা ছুটলেন ছেলের জন্য কেনা সাইকেলে চেপেই। গন্তব্য গাইবান্ধা, দূরত্ব ২৫০ কি.মি.-র বেশি। একবার ভাবেন, সাইকেল প্যাডেল করতে করতে ঢাকা থেকে গাইবান্ধা যেতে কী পরিমাণ কষ্ট হতে পারে! কিন্তু সন্তান আর পরিবারের কথা ভেবে মোহাম্মদ রাজু এই অপরিসীম কষ্ট মাথা পেতে নিয়েছিলেন। প্রায় ২০০ কি.মি. সাইকেল চালিয়ে যখন তিনি বগুড়ায় পৌঁছান, রাস্তায় থাকা সেনাবাহিনী তাকে তল্লাশির জন্য আটকায়। এরপরই তারা জানতে পারে এই মর্মস্পর্শী ঘটনা। মোহাম্মদ রাজুর আবেগ ছুঁয়ে যায় সেনাসদস্যদেরকেও। তারা একটি ট্রাকে সাইকেল সহ রাজুকে তুলে দেন। সাথে দিয়ে দেন কিছু খাবারও। সেনাবাহিনীর অবদানের কথা রিস্কা চালক রাজু কোনদিনই ভুলতে পারবেনা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বাংলার জনগণের প্রতি এই যে ভালোবাসা ও দেশ প্রেম বাংলাদেশকে আরো অন্যান্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। প্রতিদিন শত শত খারাপ খবরের ভিড়ে এমন সারল্যমাখা ভালোবাসার গল্পগুলো যেন শান্তির বাতাস হয়ে ভেসে আসে। ভালো থাকুক আমাদের সবার বাবা। আমাদের সকলের মা বাবা বেঁচে থাকতে আমরা তাদের সম্মান করি ও ভালোবাসি এবং তারা যেন কখনোই অবহেলার পাত্র না হয়। ভালো থাকুক সকলের মা বাবা।